আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার রিমান্ডে শুনানিতে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে ওবায়দুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় করা মামলায় সোমবার (২৪ মার্চ) পলককে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তবে এদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে খোশমেজাজে দেখা যায় তাকে। রিমান্ড শুনানির পর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
জানা যায় যে, আদালতের কাঠগড়ায় তোলার পরপরই পলক হাস্যোজ্জ্বল মুখে কথা বলতে থাকেন সবার সঙ্গে। রিমান্ড শুনানি শেষ হলে তিনি তার আইনজীবীর সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। একপর্যায়ে পলক তার আইনজীবীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। পরে তিনি আদালত কক্ষে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘ঈদ মোবারক।’
পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, এ নিয়ে তার মক্কেলের মোট ৬২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলো। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের ৯ দিন পর গ্রেফতার হন পলক। এরপর তাকে অনেকবার ঢাকার বিচারিক আদালতে হাজির করা হয়। বেশির ভাগ সময় তাকে বিমর্ষ দেখা গেলেও আজ ছিল ব্যতিক্রম।
ফারজানা ইয়াসমিন আরও বলেন, আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন। মা–বাবা কেমন আছেন তা পলক জানতে চেয়েছেন। কারাগারে তার মক্কেল পরিবারের সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে আর হয়তো তাকে আদালতে আনা হবে না। এ জন্য তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আদালতকক্ষে থাকা সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিএমএম আদালতের হাজতখানার সামনে আসেন। এই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশের পর আদালতের হাজতখানার প্রধান ফটক খুলে যায়।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আলাদা আলাদা হত্যা মামলায় কামরুল, আতিকুল ও কামাল মজুমদারকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন। এরপর একজন পুলিশ কর্মকর্তা পলকের নাম ধরে ডাকেন। যাত্রাবাড়ী থানার ওবায়দুল ইসলাম হত্যা মামলায় তাকে ৫ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে ওবায়দুল নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলায় পলকের নাম রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, জুনাইদ আহ্মেদ পলক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার একজন অন্যতম সহযোগী। জুলাই-আগস্টে দুই হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার সঙ্গে আসামি পলক জড়িত।
তবে পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রিমান্ড আবেদন বাতিল চান। তিনি তার মক্কেলের জামিনের আবেদন জানান।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে পলককে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।